ভারতীয় সংবিধানের তফসিল : ভারতীয় সংবিধানের দ্বাদশ তফসিল ভারতীয় সংবিধানের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ, যা বিশেষভাবে ভারতীয় রাষ্ট্রের সাংবিধানিক ব্যবস্থা ও সরকারের কাজকর্মকে সংজ্ঞায়িত করে। এটি ১৯৫০ সালে ভারতের সংবিধান গঠনের সময় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল এবং এটি রাজ্যগুলোর মধ্যে বিশেষ শ্রেণির লোকদের জন্য বিশেষ সুবিধা এবং বিশেষ আইনগত অধিকার প্রদানের উদ্দেশ্যে তৈরি করা হয়। দ্বাদশ তফসিলের মূল উদ্দেশ্য ছিল ভারতের বিভিন্ন রাজ্য এবং অঞ্চলগুলির অধিকার ও সাংবিধানিক নিশ্চয়তা বাড়ানো, যা সামাজিক এবং অর্থনৈতিকভাবে পিছিয়ে পড়া জনগণের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ছিল।
ভারতীয় সংবিধানের তফসিল অর্থাৎ দ্বাদশ তফসিলের অন্তর্গত বিষয়গুলো সাধারণত সংবিধান অনুযায়ী রাজ্যসভা, লোকসভা, রাজ্যসমিতি এবং অন্যান্য স্থানীয় প্রশাসনিক ব্যবস্থায় পদমর্যাদা ও নির্বাচন সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এটি বিশেষভাবে আদিবাসী জনগণের জন্য প্রণীত। দ্বাদশ তফসিলের আওতায়, রাজ্য সরকারের বিভিন্ন রাজনৈতিক এবং প্রশাসনিক কাজগুলো নির্ধারণ করা হয়, যাতে সমাজের পিছিয়ে পড়া অংশের জন্য ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করা যায়।
Read More : ঐতিহাসিক প্রতিষ্ঠান ও প্রতিষ্ঠাতা তালিকা
এছাড়া, দ্বাদশ তফসিল ভারতীয় সংবিধানের মধ্যে কিছু বিশেষ অনুচ্ছেদ এবং বৈষম্যমূলক আইন নিয়ে কাজ করে। এর মাধ্যমে বিভিন্ন শ্রেণির জন্য বিশেষ রিজার্ভেশন ব্যবস্থা চালু করা হয়। এটি খোঁজ নেয় দেশীয় সমাজের পিছিয়ে পড়া শ্রেণির মানুষের কল্যাণের জন্য কি ধরনের উন্নয়নমূলক পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে এবং তাদের জন্য বিশেষ সুযোগ সুবিধা কিভাবে প্রদান করা হবে। এই তফসিলের অন্তর্গত বিশেষ সুবিধা দেওয়া হচ্ছে ভারতের আদিবাসী, এসসি, এসটি এবং ওবিসি শ্রেণির মানুষের জন্য। এতে একদিকে সামাজিক সমতা প্রতিষ্ঠিত হয়, অন্যদিকে দেশের উন্নয়নমূলক কাজগুলির মধ্যে সকল শ্রেণির মানুষের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা হয়। {ভারতীয় সংবিধানের তফসিল}
দ্বাদশ তফসিলের অন্তর্ভুক্ত বিভিন্ন ক্ষেত্রগুলি যেমন আদিবাসী জনগণের জন্য সংরক্ষিত আসন এবং তাদের জন্য বিভিন্ন অর্থনৈতিক সুবিধা, তাদের শিক্ষা, চাকরি এবং অন্যান্য ক্ষেত্রে সুবিধা দেওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে। একে কেবল রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত নয়, বরং এটি একটি মানবাধিকার বিষয়ক উদ্যোগ হিসেবেও দেখা যেতে পারে, যেখানে দেশের সমস্ত নাগরিকদের সামাজিক এবং অর্থনৈতিকভাবে সমান সুযোগ দেওয়া হয়।
সংবিধানের এই অংশটি প্রমাণ করে যে ভারতের সংবিধান এমনভাবে গঠিত হয়েছে, যাতে সমস্ত জনগণের কল্যাণের জন্য সঠিক পদক্ষেপ নেওয়া যায় এবং একটি সমান ও ন্যায়পূর্ণ সমাজ প্রতিষ্ঠা করা যায়। এর মাধ্যমে ভারতের বৈচিত্র্যময় সমাজের বিভিন্ন অংশের মধ্যে সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হয়েছে। এটি বলে যে, দ্বাদশ তফসিল শুধুমাত্র একটি সাংবিধানিক গাইডলাইন নয়, বরং একটি বাস্তবধর্মী পরিকল্পনা, যা জনগণের জন্য তাদের অধিকার ও মর্যাদা রক্ষার নিশ্চয়তা দেয়। {ভারতীয় সংবিধানের তফসিল}
এটি একটি দীর্ঘস্থায়ী পদক্ষেপ, যা সমাজের সর্বস্তরের উন্নতির জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার। এই তফসিলের মাধ্যমে দেশের প্রতিটি নাগরিকের জন্য একটি সুষম উন্নয়নের সুযোগ তৈরি করার দিশা দেয়।এই সমস্ত কারণের জন্যই disari.in এই সম্পূর্ণ প্রতিবেদনটি আপনাদের জন্য নিয়ে এসেছি। প্রতিবেদনটি ভালো লাগলে অবশ্যই আমাদের পাশে থেকে আমাদেরকে সাপোর্ট করবেন। আপনারা সাপোর্ট করলে আমরা আরো নিত্যনতুন কন্ঠে বানানোর অনুপ্রেরণা। এছাড়াও আপনারা আমাদের হোয়াটসঅ্যাপ এবং টেলিগ্রাম গ্রুপ ইউ জয়েন হয়ে থাকতে পারেন সেখানেও আমরা নিত্য নতুন কনটেন্ট শেয়ার করে থাকি এরকমই।
ভারতীয় সংবিধানের তফসিল
তফসিল | তার বৈশিষ্ট্য |
---|---|
প্রথম তফসিল | ভারতের অঙ্গরাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল গুলির নাম রয়েছে এখানে । |
দ্বিতীয় তফসিল | ভারতের রাষ্ট্রপতি, বিভিন্ন রাজ্যের গভর্নর, লোকসভা, রাজ্যসভার চেয়ারম্যান ও স্পিকার ও ডেপুটি চেয়ারম্যান, বিধানসভার স্পিকার ও চেয়ারম্যান, সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি ও ভারতীয় কন্ট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেল প্রভৃতি মন্ত্রীদের বেতন, ভাতা ও সুবিধা তাদের অধিকারের বিধানগুলি দ্বিতীয় তফসিলে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। |
তৃতীয় তফসিল | ভারতের কেন্দ্রীয় মন্ত্রী এবং Control and Auditor General, সংসদ এবং রাজ্য আইনসভার সদস্য, সুপ্রিম কোর্ট ও উচ্চ আদালতের বিচারকগণ, সংসদ এবং রাজ্য বিধানসভার নির্বাচনের প্রার্থী এবং প্রতিমন্ত্রদের শপথ গ্রহণ ও প্রত্যয়নের ফর্ম গুলি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে ভারতীয় সংবিধানের এই তৃতীয় তফসিলে। |
চতুর্থ তফসিল | সংবিধানের চতুর্থ তফসিলে রয়েছে রাজ্যসভায় রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল গুলির জন্য আসন বরাদ্দ সম্পর্কিত বিধান। |
পঞ্চম তফসিল | তপশিলি ও উপজাতি এলাকার সম্প্রদায়ের মানুষদের শাসনকার্য পরিচালনার বিধি-নিষেধ রয়েছে এই পঞ্চম তফসিলে। |
ষষ্ঠ তফসিল | সংবিধানের ষষ্ঠ তফসিলে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা এবং মিজোরাম রাজ্যের উপজাতীয় অঞ্চল গুলির প্রশাসন সম্পর্কিত সমস্ত রকম নির্দেশাবলী। |
সপ্তম তফসিল | কেন্দ্রের ও রাজ্যের ক্ষমতা বন্টনের তিনটি আইনি তালিকা তথা কেন্দ্রীয়, রাজ্য এবং যুগ্ম এর সমস্ত রকম তথ্য অন্তর্ভুক্ত রয়েছে সপ্তম তফসিলে। |
অষ্টম তফসিল | ভারতীয় সংবিধান স্বীকৃত 22টি সরকারি ভাষার কথা রয়েছে এখানে। |
নবম তফসিল | রাষ্ট্রীয় আইন, ভূমি সংস্কার এবং জমিদারি ব্যবস্থার বিলুপ্তি ও প্রবিধানের কথা নবম তফসিলে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। 1951 সালে মৌলিক অধিকার লঙ্ঘনের জন্য সেগুলি আবার অন্তর্ভুক্ত আইনের রক্ষা করার জন্য নবম তফশিল সংযুক্ত করা হয়েছিল। |
দশম তফসিল | সংবিধানের দশম তফসিলে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে 1985 সালে 52তম সংশোধনী আইন দ্বারা দলত্যাগের ভিত্তিতে সংসদ ও রাজ্য আইন সভার সদস্যদের অযোগ্যতার বিধান। |
একাদশ তফসিল | 1992 সালে 73তম সংশোধনী আইনের পঞ্চায়েতের ক্ষমতাও দায়িত্ব সম্পর্কিত বিধান রয়েছে এখানে। |
দ্বাদশ তফসিল | সংবিধানের দ্বাদশ তফসিলে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে 1992 সালে 74তম সংশোধনী আইনের পৌরসভার নাগরিকদের ক্ষমতাও নাগরিকত্ব সম্পর্কিত বিধান। |
Read More : অর্জুন পুরস্কার 2024 তালিকা