Netaji Subhash Chandra Bose : নমস্কার বন্ধুর, আজকে “সফলতার দিশারী” আপনাদের জন্য নিয়ে এসেছে নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসুর জীবনী সম্পুর্ন বাংলা ভাষায় । যার মধ্যে অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে সুভাষ বসুর জন্ম কবে ও কোথায় হয় ?
সুভাষের শিক্ষা জীবন। সুভাষের দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে নিজের আত্মবলিদান। আজাদ হিন্দ ফৌজ গঠন । স্বাধীনতা সংগ্রামে মহিলাদের জন্য ঝাসির রানী ব্রিগেড সুভাষ থেকে নেতাজি হয়ে ওঠার কাহিনী । নেতাজীর মৃত্যু রহস্য । ইত্যাদি সমস্ত ঘটনা খুব সহজসরল ভাবে সংক্ষিপ্তাকারে দেওয়া হয়েছে । যেটা আশাকরি আপনাদের কাজে আসবে ।
নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসুর জীবনী

এক নজরে
সূচনা:- 1757 সালে পলাশীর যুদ্ধে ব্রিটিশদের হাতে সিরাজউদ্দৌলার পতন এবং মৃত্যুর পর ভারতবর্ষে স্বাধীনতা সূর্য সম্পূর্ণভাবে অস্তমিত হয়। এরপর থেকেই ভারতবর্ষের প্রভাব বার্তাকে ব্রিটিশদের এবং ক্রমে ভারতবর্ষের উপর একছত্র ক্ষমতা বিস্তার করে ইংরেজরা।
তারপর শুরু হয় ভারতবাসীর উপর অত্যাচার, বিভিন্ন রকম আইনকানুন তৈরি করে ভারতবাসীকে দমন করে রাখার চেষ্টা করে ব্রিটিশরা। তা অবশেষে ব্রিটিশদের এই কঠিন শৃংখল থেকে দেশবাসীকে মুক্ত করার জন্য জীবন মরণ সংগ্রামে আত্মনিয়োগ করেছিলেন বেশ কিছু মহান ভারতবাসী। তাদের দীর্ঘ লরা এবং প্রচেষ্টার ফলস্বরূপ একসময় ইংরেজরা পিছে ঘুরতে বাধ্য হয়।
নেতাজির জন্ম:-
ভারতবর্ষের স্বাধীনতা সংগ্রামে যে সকল মহান বিপ্লবী আত্মনিয়োগ করেছিলেন, তাদের মধ্যে অন্যত্র একজন ছিলেন সুভাষ চন্দ্র বসু। তিনি জন্মগ্রহণ করেন 1897 সালের 23শে জানুয়ারি উড়িষ্যার কটক শহরের সরকারি আদালতের প্রখ্যাত আইনজীবী জানকীনাথ বসুর ঘরে। তার পৈত্রিক বাসভূমি ছিল দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলার কোদালিয়া গ্রামে।
আরও পড়ুন :- ক্ষুদিরাম বসুর সংক্ষিপ্ত জীবনী
শিক্ষাজীবন:-
Netaji Subhash Chandra Bose ছোটবেলা থেকেই ব্রিটিশদের নানা রকম অত্যাচারী মনোভাব দেখে ধীরে ধীরে ইংরেজদের প্রতি তীব্র বিতৃষ্ণা নিয়ে বেড়ে উঠেছিলেন।। ছেলেবেলা থেকেই পড়াশোনায় অত্যন্ত মেধাবী ছিলেন সুভাষ।

উড়িষ্যার কটকের একটি ছোট্ট স্কুল থেকে তিনি তার পড়াশোনা শুরু করেন। ম্যাট্রিক পরীক্ষায় দ্বিতীয় স্থান অধিকার করার পর কলকাতা প্রেসিডেন্সি কলেজে ভর্তি হন তিনি। এই কলেজে ওঠেন নামক ইংরেজ সাহেবের অন্যায় অত্যাচারের প্রতিবাদ করার জন্য তাকে বিতাড়িত করা হয়।
কিন্তু সেই সময় থেকে আরো তীব্র হবে তার মনের মধ্যে বিকাশ লাভ করে ইংরেজদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ও ব্রিটিশ মুক্ত স্বাধীন ভারত গড়ার স্বপ্ন। এরই মধ্যে শিক্ষা ক্ষেত্রে আরও অগ্রসর হন তিনি। সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় বহু ইংরেজকে হারিয়ে চতুর্থ স্থান অধিকার করেন সুভাষচন্দ্র বসু। তবে সিভিল সার্ভিস পাস করার পরেও ইংরেজদের অধীনস্ত হয়ে চাকরি না করে তিনি যোগ দেন ভারতবর্ষের স্বাধীনতা সংগ্রামী। তারপর শুরু হয় তার বৈপ্লবিক জীবন।
স্বাধীনতা আন্দোলনে সুভাষ:-
অসহযোগ আন্দোলনের সময়, ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের যোগদান করেন Netaji Subhash Chandra Bose। 1938 খ্রিস্টাব্দে কংগ্রেসের হরিপুরা অধিবেশনে কংগ্রেসের বাম গোষ্ঠীর সম্পূর্ণ সমর্থনীতি সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত হন। 1939 ডিস্টাব্দে কংগ্রেসের ত্রিপুরী অধিবেশনে গান্ধীজি মনোনীত প্রার্থী পট্টভি সীতারামাইয়াকে 203 ভোটে হারিয়ে নির্বাচিত হন তিনি।
আরও পড়ুন : বিখ্যাত ব্যক্তিদের উপাধি ও তাদের উপাধিদাতা তালিকা PDF
গান্ধীজীর সঙ্গে মতবিরোধ:-
তবে এ সময় কর্ম সমিতি গঠনের বিষয়ে গান্ধীর সঙ্গে সুভাষচন্দ্র বসুর মতবিরোধ শুরু হয়। তার ফলস্বরূপ ওই বছর 11 জুলাই Netaji Subhash Chandra Bose কে কংগ্রেস থেকে বহিষ্কার করা হয়। কিন্তু কংগ্রেস পার্টি থেকে বহিষ্কার হওয়ার পরেও বিপ্লবী মনোভাব একেবারেই থেমে যায়নি ওনার। 1939 সালের 3 মে তিনি গঠন করে ফেলেন ফরওয়ার্ড ব্লক।
ব্লক গঠন:-
1940 সালে নাগপুরে ফরওয়ার্ড ব্লক এর প্রথম সর্বভারতীয় বৈঠকটি সম্পূর্ণ হয়। এখন থেকেও Netaji Subhash Chandra Bose, ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলন তীব্রভাবে গড়ে তোলার জন্য গোটা দেশবাসীর উদ্দেশ্যে তার বক্তব্য প্রকাশ করেন। স্বাধীনতা আন্দোলনের বহু ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন তিনি। এরই মধ্যে 1939 থেকে 1945 সাল পর্যন্ত সংঘটিত হওয়া দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের সময় কিছুদিন তাকে গৃহবন্দী থাকতে হয়েছিল।
স্বাধীন ভারত গড়ার প্রতিজ্ঞা সুভাষের:-
স্বাধীন ভারত গড়ার প্রতিজ্ঞা গ্রহণ করেছিলেন কিন্তু তিনি, তার মনে মনে। আর সেই লক্ষ্য নিয়ে ব্রিটিশ পুলিশের সতর্ক দৃষ্টি এড়িয়ে 1941 সালে গৃহবন্দি অবস্থা থেকে ছদ্মবেশ ধারণ করে আফগানিস্তানের কাবুল হয়ে জার্মানিতে জান এবং জার্মানির বার্লিনে একনায়ক তন্ত্রের প্রতীক হিটলারের সঙ্গে দেখা করে সাহায্য প্রার্থনা করেন।

যদিও এখানে তার উদ্দেশ্যে সফল না হওয়ায় ডুবোজাহাজ করে দীর্ঘ পথ অতিক্রম করে আসেন তিনি জাপানে। সেখানে পৌঁছে জাপান সরকারের সাহায্যে এবং রাসবিহারী বসুর সহায়তায় Netaji Subhash Chandra Bose গঠন করেন আজাদ হিন্দ ফৌজ। সেই বাহিনীর নেতা হন তিনি এবং তখন তিনি থেকেই সুভাষচন্দ্র বসু পরিচিতি পান নেতাজী নামে।
এরপর সেই বাহিনীর নিয়ে তিনি ভারতবর্ষের বাইরে থেকে ভারতে অবস্থানকারী ইংরেজদের আক্রমণ করা পরিকল্পনা গ্রহণ করেন। ব্রহ্মদেশ, ইম্ফল এবং কোহিমায় জাপানি বাহিনীর সাহায্যে আজাদ হিন্দ বাহিনী যুদ্ধবিযান চালায় এবং সেখানে তারা ব্রহ্মদেশ বাদে বাকি দুটি জায়গায় সফল হন।
আজাদ হিন্দ ফৌজ:-
এই যুদ্ধে শেষে বাহিনীর একটি বৃহত্তর অংশকে ভারত ফিরিয়ে নিয়ে আসা হয়। রাষ্ট্রদোহি তার অভিযোগে তাদের কারোর বিচার হয় এমনকি কারো কারো ফাঁসিও হয়েছিল। বিভিন্ন ঐতিহাসিকদের মতে, 1944 সালের 18 আগস্ট Netaji Subhash Chandra Bose কে নিয়ে একটি জাপানি বিমান রওনা দেয়।
বিমান দুর্ঘটনা:-
জাপানের তাইহোকু বিমানবন্দরে দুপুর আড়াইটার সময় Netaji Subhash Chandra Bose কে নিয়ে বোমারু বিমানটি করতে শুরু করে। এবং তার পরমুহূর্তেই বিমানের ইঞ্জিন থেকে একটি বিকট শব্দ শুনতে পাওয়া যায় এবং বিমানটি দুর্ঘটনা গ্রস্থ হয়ে ভূমিতে বিধ্বস্ত হয়ে আগুনে বিস্ফোরিত হয়।
অনুমান করা হয় সেই বিমান দুর্ঘটনাতেই নাকি Netaji Subhash Chandra Bose মৃত্যুবরণ করেছিলেন। তবে ভিন্ন মত অনুসারে জানা যায় সেই দুর্ঘটনা তে নাকি নেতাজির মৃত্যু ঘটে নি, তিনি অন্য কোথাও আত্মগোপন করেছিলেন। তবে তা শারীরিক মৃত্যু যেভাবে আসুক না কেন, সারাদেশের মানুষের কাছে নেতাজি তাদের হৃদয়ে এখনো অমর হয়ে রয়েছেন এবং চিরকাল থেকে যাবেন।
আরও পড়ুন : ভারতের ধ্রুপদী ভাষার মর্যাদা পেল বাংলা
মূলত সেই উদ্দেশ্যেই 23শে জানুয়ারি দিন দিনটিতে ভারতবর্ষের নানা সরকারি প্রতিষ্ঠান, বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, আদালত, থানা, বিদ্যালয় ইত্যাদি নানা জায়গায় নেতাজির উদ্দেশ্যে ফুল, মালা ইত্যাদি দিয়ে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করা হয়।